বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট লিমিট, সুবিধা ও ক্যাশ আউট চার্জ

আসসালামু আলাইকুম আপনারা যারা বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট লিমিট এবং এই অ্যাকাউন্টের সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট লেখা হয়েছে।  পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়লে বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট লিমিট,  বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্টের সুবিধা এবং বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট ক্যাশ আউট চার্জ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট লিমিট, সুবিধা ও ক্যাশ আউট চার্জ

নিচে এক এক করে প্রতিটা বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো।  আশা করি নিচের আলোচনা থেকে আপনারা বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট সম্পর্কে যাবতীয় বিষয়গুলো জানতে পারবেন।

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট লিমিট

প্রতিটা বিকাশ একাউন্ট এরই লিমিট আছে আর এই বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট এরও   বেশ কিছু লিমিটেশন রয়েছে যেগুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ

১।  পেমেন্ট গ্রহণ লিমিটঃ  আপনি যখন গ্রাহকের থেকে কোন পেমেন্ট গ্রহণ করবেন তখন এখানে কিছু লিমিটেশন দেওয়া হয়েছে যেটা হল, প্রতি  লেনদেন এ সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আপনি কোন সাধারণ গ্রাহকদের থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন।  আর একদিনে সর্বোচ্চ 30 হাজার টাকা পর্যন্ত পেমেন্ট গ্রহণ করা যাবে।

প্রতি লেনদেন এবং দৈনিক লেনদেন এর পাশাপাশি একটি বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট দিয়ে প্রতি মাসে সর্বোচ্চ  পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেমেন্ট গ্রহণ করা যাবে একজন সাধারন গ্রাহকের থেকে।

২।  মার্চেন্ট সেন্ড মানি লিমিটঃ  মার্চেন্ট সেন্ড মানি বলতে  বুঝানো হয়েছে আপনার বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে আরেকটি কোন মার্চেন্ট একাউন্টে সেন্ড মানি করার বিষয়টা।  যখন একটি মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে আরেকটি mercent একাউন্ট এ টাকা পাঠানো হবে তখন একটি লেনদেন এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার টাকা পাঠানো সম্ভব হবে।

এরপর একদিনে আপনারা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাঠাতে পারবেন একটি  rgentএকাউন্ট থেকে আরেকটি mercent account এ।  এর পাশাপাশি এক মাসে সর্বোচ্চ  4 লক্ষ 50 হাজার টাকা পর্যন্ত সেন্ড মানি করা যাবে   মার্চেন্ট to mercent account এ।

৩।  এটিএম সেটেলমেন্ট লিমিটঃ  এই ক্ষেত্রে আপনি  প্রতি ট্রানজেকশন এ সর্বোচ্চ ৩০০০ টাকা লেনদেন করতে পারবেন।  এছাড়াও একদিনে সর্বোচ্চ 20 হাজার টাকা পর্যন্ত ট্রানজেকশন করা যাবে।  তবেই এই এটিএম সেটেলমেন্ট এর ক্ষেত্রে আপনারা মাসিক লেনদেন এর লিমিট  পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা। 

৪।  ক্যাশ আউট লিমিটঃ  বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে এটিএম এর মাধ্যমে কিংবা কোন এজেন্ট এর মাধ্যমে খুব সহজেই ক্যাশ আউট করা যায় কিন্তু এখানে কিছু লিমিটেশন রয়েছে।   প্রতি ট্রানজেকশন এর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 20 হাজার টাকা ক্যাশ আউট করা সম্ভব হবে কোন এজেন্ট কিংবা এটিএম বুথ থেকে।

পাশাপাশি একদিনেও সর্বোচ্চ 20 হাজার টাকা বের করতে পারবেন আপনার বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে।  কিন্তু আপনি এক মাসে সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশ আউট করতে পারবেন একটি বিকাশ  পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে।

 বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট ব্যবহারকারীরা এজেন্ট এর থেকে সর্বনিম্ন এক টাকা ক্যাশ আউট করতে পারবে।  তবে বিকাশ অনুমোদিত কোন এটিএম বুথ থেকে সর্বনিম্ন ২৫০০ টাকা ক্যাশ আউট করতে। 

৫।  মোমেন্টারি ব্যালেন্স লিমিটঃ  এই ক্ষেত্রে আপনারা  প্রতি লেনদেন এবং দৈনিক লেনদেন এবং মাসিক লেনদেন এর লিমিট একই অ্যামাউন্ট এর পাচ্ছেন।  আর এই এমাউন্টটি হল পাঁচ লক্ষ টাকা।

৬।  মার্চেন্ট টু পার্সোনালঃ  যখন আপনার বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে কোন সাধারণ পার্সোনাল একাউন্ট এ টাকা ট্রান্সফার করতে যাবেন তখন যে লিমিটেশন রয়েছে তা হলো,   একটি ট্রানজেকশন এ সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত সেন্ড মানি করা যাবে। 

তাছাড়া আপনারা একদিনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা এবং এক মাসে সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোন পার্সোনাল বিকাশ একাউন্টে পাঠাতে পারবেন।   অর্থাৎ একটি লেনদেনে সর্বনিম্ন এক টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত সেন্ড মানি করতে সক্ষম হবেন।

 উপরের এগুলো ব্যতীত আর কোন বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট লিমিট নেই।  এই লিমিট গুলো যদি আপনার কম হয়ে থাকে তাহলে আপনি চাইলে বিকাশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে আপনার পার্সোনাল রিটেইল একাউন্টটি আপডেট করে নিতে পারেন। 

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট এর সুবিধা

এখন আমরা আপনাদের সাথে বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট এর সুবিধা গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।  একটি বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট এ যে সমস্ত সুবিধা রয়েছে এর থেকে বেশ কিছু বেশি সুবিধা পাবেন আপনারা এই বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট এর মাধ্যমে।  তাহলে নিচে বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্টের সুবিধা গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনঃ  একটি বিকাশ পারসনাল  রিটেইল একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে চাইলে কোন ধরনের ট্রেড লাইসেন্স এর প্রয়োজন নেই। এমনকি কোথাও যেতে হবে না আপনি চাইলে খুব সহজেই ঘরে বসে এক মুহূর্তেই আপনার বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন।

একাধিক একাউন্টঃ  আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে যদি আগে কোন বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খোলা থাকে তাহলেও আপনি একই জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে আবার একটি বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট খোলার সুযোগ পাবেন। 

ক্যাশ আউটঃ  আপনার বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে যেকোন জায়গায় বিকাশ অনুমোদিত এজেন্ট এবং বিকাশ অনুমোদিত যেকোনো এটিএম বুথ থেকে খুব সহজেই টাকা উত্তোলন করতে পারবেনা।

অটো পেমেন্ট গেটওয়েঃ  যে পেমেন্ট গেটওয়ে  অন্য কোম্পানিকে টাকা দিয়ে কিনে নিতে হয় সেই  অটোমেটিক পেমেন্ট গেটওয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাবেন বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্টের মাধ্যমে।  এই পেমেন্ট গেটওয়ে এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে কাস্টমার এসে খুব সহজেই পেমেন্ট করতে পারবে। 

অ্যাপ ব্যবহারঃ  বিকাশ পার্সোনাল  রিটেইল একাউন্ট এর জন্য বিকাশ এর আলাদা একটি অ্যাপ রয়েছে যেখানে অতিরিক্ত বেশ কিছু সুযোগ এবং সুবিধা পাওয়া যায়।  এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্যবসার পরিধিকে আরো বৃদ্ধি করতে পারবেন। 

লেনদেন বাতিলঃ  কোন সাধারণ গ্রাহক যদি আপনার একাউন্টে পেমেন্ট করে থাকে এবং কোনো কারণে যদি সেটি ভুল হয়ে থাকে বা অন্য কোন কারণে পেমেন্টটি আপনি নিতে না চান তাহলে বিকাশ এর অ্যাপ থেকে খুব সহজেই লেনদেনটি বাতিল করতে পারবেন। 

সেন্ডমানিঃ  এই অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে যেকোনো পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট এ সেন্ড মানি করা যায়।  এমনকি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে অন্য বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট গুলোতেও টাকা পাঠানো সম্ভব হয়। 

মোবাইল রিচার্জঃ  যেকোনো সময় আপনি বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে বাংলাদেশের অন্যান্য মোবাইল অপারেটরদের সিমে টাকা রিচার্জ করে দিতে পারবেন।

পে বিলঃ  বিকাশ থেকে যে সমস্ত বিল পে করা যায় সেই একই বিলগুলো আপনারা বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকেও খুব সহজেই পেয়ে করে দিতে পারবেন এর মধ্যে রয়েছে যেমন বিদ্যুৎ বিল গ্যাস বিল এডুকেশন ফি পানির বিল এবং অন্যান্য।

*২৪৭# এর সুবিধাঃ  যদি আপনার ইন্টারনেট কানেকশন না থাকে  অথবা অ্যাপ ব্যবহার করার সুযোগ না থাকে তাহলে আপনি দেশের যে কোন জায়গা থেকে বিকাশের কোড *২৪৭#  ডায়াল করেও বিকাশ পার্সোনাল  রিটেইল একাউন্টের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা গুলো উপভোগ করতে পারবেন। 

 ব্যবসায়িক বিশ্বস্ততাঃ  যখন আপনার একটি বিকাশ পার্সোনাল  রিটেইল একাউন্ট থাকবে তখন কাস্টমার আপনাকে বিশ্বাস করবে খুব সহজেই।  এর কারণ হচ্ছে এই অ্যাকাউন্ট গুলোতে টাকা পাঠাতে গেলে বিকাশ অ্যাপ এর পেমেন্ট অপশন ব্যবহার করতে হয়।

 ওপরের এগুলো বাদ দিতে আরও বিকাশ পার্সোনালি টাইটেল অ্যাকাউন্ট এর সুবিধা রয়েছে যেটা আপনারা বিকাশ  এর এই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করলে  আস্তে আস্তে বুঝতে পারবেন।

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট ক্যাশ আউট চার্জ

বিকাশ  এর এই একাউন্টএও কিন্তু ক্যাশ আউট চার্জ রয়েছে।  যেটা না জানলে বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্টে ব্যবহার করতে অনেক সমস্যা হতে পারে।  তবে যখন আপনি প্রথম বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট খুলবেন তখন কিন্তু সর্বপ্রথম তিন মাস ক্যাশ আউট  একদম ফ্রি তে করতে পারবেন।

তবে প্রথম তিন মাস এর মধ্যে আপনি সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা পর্যন্ত ফ্রিতেই ক্যাশ আউট করতে পারবেন এর পরবর্তী মাসে কিংবা  এই এমাউন্টের বেশি টাকা  উত্তোলন করতে গেলে ক্যাশ আউট ফি প্রদান করতে হবে। 

 বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট এ দুইভাবে ক্যাশ আউট করা যায় একটি হল বিকাশ এজেন্ট এর মাধ্যমে এবং আর একটি হল বিকাশ অনুমোদিত এটিএম বুথ থেকে।  এই দুই ভাবে ক্যাশ আউট করতে হলে আপনাকে বিকাশ কর্তৃপক্ষকে ১.৪৯% ফি প্রদান করতে হবে।  অর্থাৎ ১০০ টাকা উত্তোলন করতে গেলে ১ টাকা ৪৯ পয়সা ফি দিতে হবে।  কিন্তু যদি ১ হাজার টাকা উত্তোলন করতে যান তাহলে এখানে আপনাকে ১৪.৯ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।

 বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট এর অন্যান্য চার্জ

  • পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে কোন সাধারণ পার্সোনাল একাউন্টে টাকা পাঠাতে গেলে যে কোন অ্যামাউন্ট এর টাকাতে ৫ টাকা ফি প্রদান করতে হয়।
  • অন্য কোন মার্চেন্ট একাউন্টে পেমেন্ট করতে হলে  ০.২০ শতাংশ হারে  চার্জ কেটে নেওয়া হবে। 
  •  এই অ্যাকাউন্ট থেকে মোবাইল রিচার্জ একদম ফ্রি করা যায়। 
  •  এছাড়াও বিভিন্ন  পে বিল গুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পরিশোধ করা যাবে।

পরিশেষে

আশা করি বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারছেন। এখানে আমরা বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট লিমিট এবং বিকাশ পার্সোনাল রিটেই একাউন্ট এর সুবিধা গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পুরো পোস্ট পড়ার পরেও যদি আরও কিছু অজানা থাকে তাহলে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন